সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ কারাগারে মুজিববর্ষ উদযাপনে খরচ ১২৬১ কোটি টাকা পুলিশের নতুন আইজিপি বাহারুল আলম লাখে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে জামালগঞ্জে অগ্নিকান্ডে দুটি বসতঘর পুড়ে ছাই ধর্মপাশায় আসামি গ্রেফতার শহরে ফুটপাত দখল করে দোকানপাট: যানজটে জনভোগান্তি পিকনিক স্পটে দুর্বৃত্তদের হামলা ও ভাঙচুর ৭০ লাখ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভরে আ.লীগের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নেই : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জামালগঞ্জে এক পরিবারের ৩ বসতঘর পুড়ে ছাই ব্যাংকের সব শাখায় ১, ২ ও ৫ টাকার কয়েন লেনদেনের নির্দেশ সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ৮ দিনের রিমান্ডে সারদায় প্রশিক্ষণরত আরও তিন এসআইকে অব্যাহতি আ.লীগের পুনর্বাসনে চেষ্টাকারীরা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে : হাসনাত আবদুল্লাহ খেলাপি আদায়ে অর্থ ঋণ আদালতকে সক্রিয় করছে সরকার সংস্কার শেষে নির্বাচন কোনো যৌক্তিক কথা নয় : মঈন খান ফোকাস এখন একটাই- নির্বাচন : মির্জা ফখরুল

পাচারের টাকা আনা হবে, দেশি সম্পদ জব্দ হবে

  • আপলোড সময় : ০৬-০৯-২০২৪ ০৯:৪০:১২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৯-২০২৪ ০৯:৪০:১২ পূর্বাহ্ন
পাচারের টাকা আনা হবে, দেশি সম্পদ জব্দ হবে
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: বিভিন্ন ব্যাংকের যেসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, তা দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। পাচার হওয়া অর্থের বড় গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্য, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য বিশ্বব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে সরকার আলোচনা শুরু করেছে। পাশাপাশি দেশে ঋণখেলাপিদের যেসব স¤পদ আছে, সেসব জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত বুধবার ব্যাংকার্স সভায় এমন তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। জানা গেছে, গতকাল ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় আট মাস পর। এটি ছিল নতুন গভর্নরের প্রথম সভা। এ সভার আলোচ্যসূচিতে নানা বিষয় থাকলেও ঘুরেফিরে সমস্যায় পড়া ব্যাংকগুলো নিয়েই কথা বেশি হয়। বিশেষ করে ইতিমধ্যে যেসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে, সেগুলোর তারল্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ নিয়েও কথা হয়। এতে উঠে আসে, দেশের ১১ ব্যাংক থেকে গ্রাহকেরা টাকা তুলতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে টাকা না ছাপিয়ে বিকল্প উপায়ে এসব ব্যাংককে সহায়তার সিদ্ধান্ত হয়। অন্য ব্যাংকগুলো সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেবে, এতে নিশ্চয়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সভা শেষে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সমস্যায় পড়া ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের স্বার্থ বাংলাদেশ ব্যাংক দেখছে। সরকার এসব ব্যাংকের আমানতকারীদের পাশে আছে। ব্যাংকগুলোর পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ সময় আমানতকারীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন তিনি। গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাত থেকে বিভিন্নভাবে বড় অঙ্কের অর্থ পাচার হয়ে গেছে। মূলত সাত-আটটি ব্যাংক থেকে এই অর্থ বের হয়েছে। এসব ব্যাংক তারল্য-সংকটে পড়েছে। আমরা আগের মতো টাকা ছাপিয়ে এসব ব্যাংকে দেব না। এটি করতে হলে দুই লাখ কোটি টাকা ছাপাতে হবে। এতে মূল্যস্ফীতি, ডলারের দাম - সবকিছু ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যাবে। আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা তারল্য-সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে সীমিত আকারে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এসব ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংক থেকে টাকা আমানত হিসেবে পাবে, এতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চয়তা (গ্যারান্টি) দেবে। গভর্নর বলেন, যেই ব্যাংকগুলো এখন সমস্যায় পড়েছে, আমরা বেশ আগে থেকেই তা জানতাম। এমনকি যাঁরা টাকা জমা রেখেছেন, তাঁরাও সেটা জানতেন। বেশি মুনাফার আশায় অনেকে এসব ব্যাংকে টাকা রেখেছেন। এ জন্য এসব ব্যাংক থেকে বেশি টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ পেয়েছে। তাই যাঁরা টাকা জমা রেখেছেন, তাঁদের কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে। আহসান এইচ মনসুর বলেন, এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনাতেও পরিবর্তন আসবে। এসব ব্যাংকে নিরীক্ষা করা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত হবে, এসব ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কী হবে। এগুলো পুনর্গঠনের মাধ্যমে একা চলবে নাকি কারও সঙ্গে একীভূত হবে, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে। ছোট ব্যাংক হলে অবসায়ন হতে পারে। ইসলামী ব্যাংকের অর্ধেক টাকা নাই হয়ে গেছে। এক-দুই বছর সময় লাগবে এসব ব্যাংক মেরামত করতে। গভর্নর বলেন, আমরা বড় ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করে তাদের দেশে থাকা স¤পদ জব্দ করার উদ্যোগ নিয়েছি। পাচার করা অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। এ জন্য বিশ্বব্যাংক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সামনে আরও আলোচনা হবে। আমরা তাদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত আনতে ও কারিগরি সহায়তা দিতে আহ্বান জানিয়েছি। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে যে অর্থ পাচার হয়েছে, তা জব্দের জন্য বলছি। আহসান এইচ মনসুর বলেন, যুক্তরাজ্যেই শুধু একজনের ৫০০-৬০০ বাড়ির তথ্য পাওয়া গেছে। আরও অনেকের এমন স¤পদ রয়েছে। আমাদের অর্থের বড় গন্তব্য যুক্তরাজ্য, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব অর্থ ফেরাতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেখা যাক কী হয়। গভর্নর বলেন, সাত-আটটি ব্যাংকে সমস্যা থাকলেও পুরো ব্যাংকিং কার্যক্রমে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। ব্র্যাক ব্যাংকের আমানতে ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি আছে। সমস্যায় পড়া ব্যাংকের আমানতকারীদের আমরা রক্ষা করব। সরকার তাঁদের পাশে আছে। কিন্তু এ জন্য সময় দিতে হবে। সভা শেষে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ব্যাংক খাতের উন্নয়নে তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা যুক্ত থাকবেন। খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ, আইনি কাঠামো জোরদার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করতে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ হলো সরকারি চারটি ব্যাংকে দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলারের বিল পরিশোধ আটকে আছে। আমরা আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটা শোধ হবে। এতে বাজারের ওপর যে চাপ আছে, তা কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, নীতি সুদহার ততক্ষণ বাড়তে থাকবে, যতক্ষণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে নীতি সুদের হার বেড়ে ১০ শতাংশে পৌঁছাবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স